বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ও বিক্রিত গাড়ি হচ্ছে টয়োটা। টয়োটা বিশ্বের বড় একটা মার্কেট দখল করে আছে। এর মূল বিশেষত্ব হচ্ছে সময়ের প্রয়োজনে ও মানুষের চাহিদার উপর ভিত্তি করে টয়োটা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মডেলের কার গাড়ি তৈরি করে। বাংলাদেশে টয়োটা কারের দাম নির্ভর করে এর মডেলের উপর। এর মধ্যে কিছু জনপ্রিয় মডেল হচ্ছে টয়োটা অ্যাক্সিও, টয়োটা এক্স করোলা, টয়োটা নোয়া, টয়োটা এয়লিয়ন ইত্যাদি। চলুন এগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
Toyota Axio
শুধু জাপানে নয়, সারা বিশ্বে রেকর্ড বিক্রির গর্ব অর্জন করেছে এই টয়োটা অ্যাক্সিও গাড়িটি। এটি একটি ছোট আকারের যাত্রীবাহী গাড়ি হওয়ায় সুবিধাজনক ভাবে পরিচালনা করা যায়। গাড়িটির ডিজাইনের উদ্দেশ্য ছিলো এমন যে আকারে কমপ্যাক্ট এবং মাঝারি আকারের একটি আরামদায়ক গাড়ি হবে। টয়োটা অ্যাক্সিও এর জন্য দুই ধরনের ইঞ্জিন রয়েছে একটি ১.৫ লিটার এবং অন্যটি ১.৮ লিটার, উভয় ইন-লাইন ৪‐সিলিন্ডার ইঞ্জিন। টয়োটা করোলা সিরিজের জন্য ১.৮ লিটার ইঞ্জিনটি বিশেষ করে তৈরি করা হয়েছিল কারণ এটি পরিবেশ বান্ধব এবং উচ্চমানের শক্তি এবং টর্ক উৎপন্ন করতে পারে। এই গাড়ির ট্রান্সমিশনের জন্য সুপার সিভিটি-আই থাকে।
Toyota X Corolla
টয়োটার ভিতরে আরেকটি জনপ্রিয় কার হচ্ছে এক্স করোল্লা। আকৃতির দিক থেকে অ্যাক্সিওর কাছাকাছি হলেও এর কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। টয়োটা এক্স করোলা তে অ্যাকোস্টিক কন্ট্রোল ইন্ডাকশন সিস্টেম এবং অত্যাধুনিক করোলা আলটিস এক্স ডুয়াল ভিভিটি-আই ইঞ্জিনটি রয়েছে যার কর্মক্ষমতা, শক্তি, স্থায়িত্বকাল দূর্দান্ত।
Toyota Land Cruiser Prado
টয়োটা ব্র্যান্ডের মধ্যে একটি আদর্শ কার হচ্ছে টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার প্রাডো। মূলত টয়োটার সকল কার জাপানে তৈরি করা হয় কিন্তু টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার প্রাডো এর ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন। এটি প্রথম অবস্থায় জাপানে তৈরি করা হলেও পরবর্তিতে অস্ট্রেলিয়ায় তৈরি করা হয়। টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার প্রাডো দীর্ঘ ভ্রমনের জন্য আরামদায়ক। টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার প্রাডোতে জ্বালানী হিসেবে শুধুমাত্র ডিজেল ব্যবহার হয়। এটিতে দুই পার্শ্বে মোট ৪ টি দরজা রয়েছে।
Toyota Aqua Hybrid
কম দামের জন্য অ্যাকোয়া হাইব্রিড বাংলাদেশে এখন বেশ জনপ্রিয়। অ্যাকোয়া হাইব্রিড কারে দুটি এয়ার ব্যাগ আছে এবং গাড়ির সাথে থাকা ডিজিটাল ডিসপ্লে আছে যা দ্বারা ব্যাটারি/ইঞ্জিন থেকে চাকায় শক্তির প্রবাহ দেখা যায়। এ কারের সবচেয়ে জনপ্রিয় দিক হচ্ছে কম জ্বালানী খরচে অধিক রাস্তা অতিক্রম করতে পারে। এর দুটো ইঞ্ছিন থাকে। একটি পেট্রোল ইঞ্জিন এবং অন্যটি ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিন। যখন পেট্রলে চলে তখন ব্যাটারি চার্জ হয়। হাইওয়ে এবং শহরে ড্রাইভিং এ গড়ে প্রায় ২৬ কিমি/লি চালানো যায়।
Toyota Noah
পারিবারিক ট্রিপ বা ভ্রমনের জন্য টয়োটার নোয়া হচ্ছে একটি আদর্শ গাড়ি। গাড়ির ডিজাইন যেমন আধুনিক তেমন রয়েছে ভিতরে আরামদায়ক সিট। এটি আকারে তুলনা মূলক বড় রয়েছে লাক্সেরিয়াস ৭জনের সিট । পিছনের দিকে রয়েছে একটি বিশাল লোডিং স্পেস। টয়োটা নোয়াতে রয়েছে পেট্রল ইঞ্জিন। আর পেট্রলের গাড়ি হিসেবে একসাথে ১৬১০ কেজি ওজন বহন করতে পারা টয়োটা নোয়া। ৭টি আসন এবং ১৬১০ কেজি একটি পেট্রোল গাড়ির জন্য এটি একটি বড় অর্জন।
Toyota Probox
টয়োটা প্রোবক্স অল্প বাজেটের মধ্যে একটি জনপ্রিয় কার। বিশেষ করে যারা বেশি ব্যয়বহুল গাড়ি পছন্দ করেন না তাদের জন্য আদর্শ একটি গাড়ি হতে পারে টয়োটা প্রোবক্স। এটি অন্যান্য গাড়ির চেয়ে আকারে তুলনামূলক ছোট। এছাড়াও টয়োটা প্রোবক্স মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পাওয়ার অনেকগুলো কারণও রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অধিক জ্বালানী সাশ্রয়ী যা বানিজ্যিকভাবে ও পারিবারিকভাবে যাত্রী বহন করতে সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করে। এই গাড়িতে মোট ৫ টি আসন থাকলেও এর পিছনে অতিরিক্ত জায়গা ফাকা থাকে যেখানে মালামাল বহন করা যায়। এর নিরাপত্তার জন্য রয়েছে দুটি এয়ারব্যাগ যা স্টিয়ারিং হুইল এবং ড্যাশবোর্ডের কাছে থাকে। এটি এমন একটি গাড়ি যার যন্ত্রাংশ যেকোন জায়গায় সহজেই পাওয়া যায় এর জন্য ব্যবহারকারীকে বেশি ঝামেলা পোহাতে হয় না।
Toyota Premio
টয়োটা প্রিমিও এবং টয়োটা এলিয়ন এই দুইটি গাড়ির মধ্যে রয়েছে ব্যাপক মিল এজন্য এদেরকে জমজও বলা হয়ে থাকে। টয়োটার এই মডেলটি অনেক পুরাতন হলেও সময়ের সাথে মিল রেখে জাপানি ডাইমেনশন রেগুলেশন দ্বারা কমপ্যাক্ট গাড়িতে রূপান্তরিত করা হয়েছে। টয়োটার এই কারের সাথেও রয়েছে আরামদায়ক পাঁচটি আসন। সামনের দিকে দুটি এবং পিছনের দিকে ৩টি। প্রত্যেক সীটের সাথে রয়েছে সিট ব্যাল্ট যা যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যে দীর্ঘ পথ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা প্রদান করতে সক্ষম। বর্তমানে টয়োটা প্রিমিও কার এর দাম সাধ্যের ভিতরেই রয়েছে।
Toyota Fielder
টয়োটা ফিল্ডার এর মূলত নাম হচ্ছে টয়োটা করোলা ফিল্ডার। এটি দুটি ইঞ্জিনের হয়ে থাকে একটি হচ্ছে 1.5L 1NZ ইঞ্জিন এবং অন্যটি হচ্ছে 1.8L 2ZR ইঞ্জিন। এই দুই ইঞ্জিনের বিশেষত্ব হচ্ছে অটোমেটিকে ও ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন এবং 2WD বা 4WD এর উপযোগী। টয়োটা ফিল্ডার এর ডিজাইনের উপরে মিল রেখে এর ভিতরের সিটগুলোকে সাজানো হয়েছে। প্রত্যেক গাড়ির সাথে রয়েছে কেবিন স্টোরেজ যেখানে গ্লাভ বক্স, সেন্টার বক্স, সামনের ডোর সাইড পকেট, রিয়ার সিট পকেট আছে। অন্যান্য গারির মতো এর রয়েছে বুট স্পেস সেখানে যাত্রীর লাগেজ ও অন্যান্য মালামাল বহন করা যায়। এই গাড়ির গতি ঘন্টায় ১০০ কিমি এবং প্রতি লিটারে গড় ১৬.৫ কিমি পথ অতিক্রম করতে পারে।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: June 13, 2024