bdstall.com

মনিটর ব্যবহারে চোখের ক্ষতি কিভাবে কমাবেন?

মনিটর আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী, হউক সেটা কাজের ক্ষেত্রে কিংবা অবসরে সময় কাটানোর জন্য। সপ্তাহে গড়ে প্রায় ৫০ ঘন্টার মত সময় কাটে আমাদের মনিটর স্ক্রীনে তাকিয়ে। অবসর সময় কাটানো কিংবা কাজের জন্য মনিটরের স্ক্রীনে তাকিয়ে থেকে আমরা নিজেদের চোখের বিশাল ক্ষতি বয়ে আনছি সেদিকে আমাদের সচেতনতা খুবই কম। যার ফলে যেকোনো বয়সে দ্রুত আমরা চোখের সমস্যায় মারাত্বক ভাবে আক্রান্ত হচ্ছি। বাংলাদেশে বর্তমানে ‘আই- প্রটেক্টর’ যুক্ত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মনিটর পাওয়া যায় যা তুলনামূলকভাবে চোখের কম ক্ষতি করে। তবে মনিটর কেনার আগে বিডিস্টলে মনিটরের দাম দেখে নিতে পারেন কারন তাতে ভাল মানের আই-প্রটেক্টর যুক্ত মনিটর কেনার পাশাপাশি অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। এছাড়া মনিটর ব্যবহারে আমাদের চোখ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং কিভাবে ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় সে বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাকঃ

 

মনিটর ব্যবহারে চোখ যেভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ঃ 

চোখ আমাদের শরীরের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অঙ্গ। এই অঙ্গটির অবর্তমানে একজন স্বাভাবিক মানুষ যেকোনো সময় অচল হয়ে যেতে পারেন। তাই মনিটর ব্যবহারে আমাদের যেসব কারণে দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সে বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাকঃ 

  • মনিটর ব্যবহারে ডিসপ্লে থেকে যে নীল রশ্মি চোখে পড়ে তা চোখের কোষকে ক্ষতিগ্রস্থ করে।
  • চোখের রেটিনায় যে ক্ষতি হয় তা পরবর্তীতে অন্ধত্বের দিকে ধাবিত করতে পারে।
  • মাত্রারিক্ত মনিটরে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখে ব্যাথা শুরু হবে, যার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে।
  • মনিটরে একটানা তাকিয়ে থাকার ফলে হঠাৎ পিছন ফিরলে কিংবা অন্যদিকে তাকালে ঝাপসা দেখা থেকে মাথা ব্যাথা শুরু হতে পারে।
  • নির্দিষ্ট দূরত্বে না দেখে একটানা মনিটর দেখার ফলে শরীরের মেলাটিনের উৎপাদন হ্রাস করে, ফলে চোখের পাশাপাশি ব্রেস্ট ও প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকে।
  • এমনকি মেলাটিনের অভাবে চোখের পাশাপাশি ত্বকে লালচে ভাব তৈরী করতে পারে এবং শরীরের ত্বকের রঙ ফ্যাকাশে হয়ে যেতে পারে।
  • মনিটরের পিক্সেল গুলো মূলত ছোট বড় হওয়ার ফলে নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে না দেখার ফলে বাইরের কোনো কিছু কাছে কিংবা দূর থেকে দেখতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে।
  • তাছাড়া অতিরিক্ত সময় মনিটরে চোখ রাখলে চোখের পানি পড়া শুরু করবে এবং প্রচন্ড মাথা ব্যাথার সৃষ্টি করবে।
  • বাচ্চারা যদি সারাক্ষণ মনিটরে চোখ রাখে সেক্ষেত্রে চোখে জ্বালা পোড়া, চোখে পানি পড়া শুরু হবে। এমনকি চোখ চুলকানোর ফলে বাচ্চাদের ইনডিউস মায়োপিয়া বা চোখ ট্যারা হয়ে যেতে পারে।

মনিটর ব্যবহারে চোখের ক্ষতি যেভাবে কমাবেনঃ

মনিটর ব্যবহারে চোখের কি কি সমস্যা হতে পারে সে সম্পর্কে জানা গেলো। সমস্যা গুলো সম্পর্কে আমাদের সচেতন থাকাটা খুবই জুরুরি। মনিটর ব্যবহারের ক্ষেত্রে চোখকে কিভাবে নিরাপদ রাখা যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ

  • মনিটর থেকে যে নীল আলো রশ্মি পড়ে তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নীল আলো প্রটেক্টর গ্লাস ব্যবহারে চোখ অনেকাংশে সুরক্ষিত থাকবে।
  • সহনীয় পর্যায়ে মনিটরের ব্রাইটনেস ধরে রাখা উচিত কিংবা বিশেষ করে রাতে বেলা দেখার জন্য নাইট মোড অন করে দেখা।
  • মনিটর দেখার সময় বাইরের আলো যেন স্ক্রীনে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখা।
  • কাজের ফাকে মাঝে মাঝে চোখে পানির ঝাপটা দেওয়া এতে চোখে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে এবং চোখ ঠান্ডা থাকে।
  • চোখ সুরক্ষিত রাখতে ২০-২০-২০ নিয়ম অনুসরন করা উচিত। যা ২০ মিনিট পরপর ২০ মিটার দূরের কোনো বস্তুকে ২০ সেকেন্ড দেখা ফলে চোখের আদ্রতা বাড়বে এবং চোখ থাকবে চাপ মুক্ত।
  • মনিটরে কাজ করার সময় ফ্রন্ট চোখের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যবহার করা।
  • মনিটর দেখার সময় চোখের পলক ফেলা উচিত কিছু সময় পর পর এত চোখের শুষ্কতা কমে যায়।
  • দেখার পাশাপাশি মনিটর স্ক্রীনে ধুলা,বালি থেকে পরিষ্কার রাখা ফলে ক্রনিক হেডেক হবে না।
  • মনিটর দেখার পাশাপাশি চোখ উপরে নিচে ডানে বামে ঘুরিয়ে হালকা কিছু ব্যায়াম করা।
  • কাজের ক্ষেত্রে কিংবা অবসরে মনিটর দেখার সময় আড়াআড়ি ভাবে বসা যাবে না।
  • প্রতিদিন ঘুমানোর ২৫-৩০ মিনিট আগে মনিটর সামনে থেকে উঠে যাওয়া এবং অন্তত আট ঘন্টা ঘুমানো উচিত।
  • নিয়মিত মনিটর দেখে কাজ করেন যারা তাদের বছরান্তে একবার চোখের ডাক্তার দেখানো উচিত।
  • ভিটামিন জাতীয় খাবারের সাথে নিয়মিত শাক সবজির খাওয়া যা চোখের কর্নিয়াকে ভালো রাখবে। 
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: April 29, 2023
Reviews (0) Write a Review