মধু হল এক প্রকারের মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি বিভিন্ন প্রতঙ্গ ফুলের মধ্য থেকে সংগ্রহ করে মৌচাকে সংরক্ষন করে । যা পরবর্তিতে মানুষ তাদের নিজেদের প্রয়োজনে মৌচাক থেকে সংগ্রহ করে থাকে। মধু একটি সুপেয় ঔষধিগুণ সম্পন্ন তরল ভেষজ। এটি স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রোগ মুক্তিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর তাছাড়া বাংলাদেশে মধুর দাম অনেক কম এবং প্রাকৃতিক মধুর পাশাপাশি কিছু পরিমান মধু চাষ হয়।
মধুর প্রধান রাসায়নিক উপাদান হলো ফ্রুক্টোজ এবং ডেক্সট্রোজ। এছাড়াও মধুতে থাকে সুক্রোজ, প্রোটিন, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, লৌহ, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, ক্লোরিন, গন্ধক এবং ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘কে’ ও ‘ই’ ।
মধুতে এতসব গুণাগুন থাকার ফলে এটি মানুষের জন্য খুবই উপকারি। মধু মানুষের শরীরে অনেক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে ঔষধের চেয়েও ভালো কাজ করে। যেমন:-
১। দুই চা চামচের সমপরিমাণ মধু ও বাসকপাতার রস মিশিয়ে খেলে সর্দি ও কাশি সেরে যায়।
২। প্রতিদিন ভোরে দুই চা- চামচ মধু পানিতে মিশিয়ে একাধারে চার-পাঁচ মাস ধরে পান করলে চুলকানি, ব্রন,ফুসকরি প্রভৃতি ত্বকের রোগ একেবারে নির্মূল হয়ে যায় ।
৩। পানিতে অল্প মধু মিশিয়ে খেলে পাকস্থলীর ক্ষত সারে।
৪। এক কাপ দুধে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে রোজ সকালে খেলে শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৫। প্রতিদিন এক চামচ মধু পানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৬। মধুর সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে খেলে শরীরের মেদ কমে।
মধুর এতসব উপকারিতার জন্য মানুষের মাঝে মধুর চাহিদার কমতি নেই। সেই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মধুর সাথে বিভিন্ন ভেজাল দ্রব্য মিশিয়ে বা নকল মধু সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করছে। সেটার ভুক্তভুগি হচ্ছি আপনি আমার মত সাধারণ জনগণই। তাই মধু ক্রয় করার আগে অবশ্যই সেটা খাটি মধু কিনা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। খাটি মধু চিনার কিছু উপায় হলো:-
১। পানির পরীক্ষা: এক গ্লাস পানিতে সামান্য মধু নিন যদি মধু নকল হয় তাহলে সেটা পানির সাথে সম্পূর্ণ মিশে যাবে কিন্তু আসল মধু সম্পূর্ণ মিশবে না কিছু অংশ পানিতে ভাসবে।
২। আগুনের পরীক্ষা : প্রথমে দিয়াশলাইয়ের একটি কাঠি নিন তারপর সেটা মধুতে চুবিয়ে নিন। এবং সেই অবস্থায় ম্যাচেবক্সে ঘর্ষন করে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করুন। যদি আগুন জ্বলে তাহলে মধু আসল কারণ খটি মধু দাহ্য পদার্থ। নকল মধু বা মধুতে ভেজাল মেশানো থাকলে তা কখনোই জ্বলবে না।
৩। ফ্রিজিং পরীক্ষা : মধু যদি খাটি হয় তালে সেটা ফ্রিজে রাখলে জমবে না। আর যদি নকল হয় তাহলে সেটা জমে যাবে। এবং মধুতে ভেজাল মেশানো থাকলে মধুর তলানিতে জমাট বেধে যাবে।
৪। ঘনত্ব পরিক্ষাঃ প্রাকৃতিকভাবে সংগ্রহ করা মধু অনেক পাতলা হয়, অনেকটা সরিষার তেলের মত। আপনি যখন বোতল এদিক ওদিক করবেন তখন দেখবেন খুব দ্রুত সেটি গড়িয়ে যাচ্ছে। তবে চাষ করা মধু একটু ভারী হবে।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: January 31, 2022