bdstall.com

একটি চমৎকার কনফারেন্স রুম সেট আপ করার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র

কর্পোরেট দুনিয়ায় কনফারেন্স রুম হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কনফারেন্স রুমে একটি অফিসের যাবতীয় মত-বিনিময় ও কৌশল নির্ধারন করা হয়। অর্থাৎ, একটি প্রতিষ্ঠানের মস্তিস্ক হিসেবে ধরা হয় কনফারেন্স রুমকে। তাই কনফারেন্স রুম সঠিকভাবে সেট-আপ করা জরূরী। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে একটি কনফারেন্স রুম সেট-আপে যেসকল ডিভাইস ও আসবাবপত্র রাখা উচিত সেই বিষয়ে একটি গাইডলাইন নিয়ে আমরা এই ব্লগে আলোচনা করবো।

 

কনফারেন্স রুম সেট-আপে যা যা ডিভাইস থাকা উচিতঃ

প্রোজেকশন ডিভাইসঃ প্রথমে আপনাকে একটি প্রোজেকশন ডিভাইস নির্বাচন করতে হবে যা সাধারণত একটি প্রজেক্টর হতে পারে। তবে, বর্তমানে কম দামে বড় টিভি পাওয়া যাচ্ছে তাই এখন টিভি ধীরে ধীরে প্রজেক্টরের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে।

  • মাল্টিমিডিয়া প্রোজেক্টরঃ কনফারেন্স রুমে প্রজেক্ট এর ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ন। প্রজেক্টরের মাধ্যমে একটি মিটিং রুমের যাবতীয় পরিকল্পনা স্ক্রিনে তুলে ধরা সম্ভব। ফলে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে অনেক সুবিধা হয়। প্রজেক্টর মূলত কনফারেন্স রুমের আকার বা পরিধির উপর নির্ভর করে সেট করা উচিত। কনফারেন্স রুমের জন্য প্রোজেক্টর ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪ লক্ষ টাকা দামের পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাজেট ও চাহিদা অনুযায়ী ভালো মানের প্রজেক্টর এর দাম জেনে নিতে পারবেন বিডিস্টল এর অনলাইন ওয়েবসাইট থেকে। 
  • টেলিভিশনঃ বর্তমানে প্রজেক্টরের পাশাপাশি বড় আকারের টেলিভিশন গুলো বিভিন্ন কনফারেন্স রুমে ব্যবহার করা হচ্ছে। সাধারনত একটি কনফারেন্স রুমে ৬৫ ইঞ্চি থেকে ১০০ ইঞ্চি সাইজের টেলিভিশন গুলো ব্যবহার করা সম্ভব। টেলিভিশনে এইচডিএমআই কানেক্ট করে একটি ল্যাপটপের মাধ্যমে খুব সহজেই বিভিন্ন পরিকল্পনা টেলিভিশনে উপস্থাপন করা যাবে। কনফারেন্স রুমের জন্য যেহেতু বড় ডিসপ্লের স্মার্ট টিভির প্রয়োজন হয় তাই এই ধরনের টিভির দাম অন্যান্য সাইজের টিভির তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।   

অডিও কনফারেন্স সিস্টেমঃ কনফারেন্স রুমের অন্যতম একটি উপাদান হচ্ছে অডিও কনফারেন্স সিস্টেম। অডিও কনফারেন্স সিস্টেম ছাড়া একটি কনফারেন্স রুম পরিপূর্ণ করা সম্ভব হয় না। মূলত এই ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস মাইক ও স্পিকারের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়। তাই এটির মাধ্যমে মিটিং চলাকালীন প্রত্যেকেই তার মতামত প্রকাশ করতে পারবেন। কনফারেন্স রুম তুলনামূলক বেশি বড় হলে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে স্পষ্ট ভাবে প্রত্যেকের কথা পৌছে দেওয়ার জন্য অডিও কনফারেন্স সিস্টেম থাকা আবশ্যিক। 

 

ওয়ারলেস প্রেজেন্টারঃ ওয়ারলেস প্রেজেন্টার ডিভাইস টি হচ্ছে একটি লেজার সিস্টেম যেটি ব্যাবহার করা কনফারেন্স রুমে একজন উপস্থাপক প্রজেক্টরে প্রেজেন্ট করা তথ্যগুলো মিটিং এ উপস্থিত সবার মাঝে পয়েন্ট করে করে উপস্থাপন করতে পারবেন। ওয়ারলেস প্রেজেন্টার এ ওয়ারলেস ফাংশন থাকায় উপস্থাপক যেকোনো স্থান থেকে খুব সহজেই কনফারেন্স রুমের উপস্থিত সবাইকে তার উপস্থাপিত বিষয় সম্পর্কে বুঝাতে পারবেন।

 

কনফারেন্স রুম এর ডেকোরেশনে যা থাকা উচিতঃ

  • লাইটিংঃ কনফারেন্স রুমকে আকর্শনীয় করে ফুটিয়ে তোলার জন্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকা জরুরী। প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা না থাকলে কৃত্রিম আলোর মাধ্যমে রুমকে আলোকিত করা যেতে পারে। এর জন্য রুমে লাইটিং সেট-আপ করতে হবে।
  • শব্দ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থাঃ একটি মিটিংকে ফলপ্রসূ করার জন্য মনোযোগ স্থির রাখা জরূরি। তাই কনফারেন্স রুমের ভিতরের পরিবেশ হওয়া উচিত নিবির ও কোলাহল মুক্ত। একটি মিটিং বা কনফারেন্স চলাকালীন যেনো কোনো অবস্থাতেই বাহিরের আওয়াজ ভিতরে প্রবেশ না করতে পারে সেজন্য সাউন্ড প্রুফ করে রুমকে তৈরি করা উচিত। সেক্ষেত্রে রুমে কাঁচের দরজা ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • এয়ার কন্ডিশনারঃ কনফারেন্স রুম যেহেতু আকারে বড় ও লোক সমাগম বেশী থাকে তাই এখানে একটি এয়ার কন্ডিশনার সেট করা যেতে পারে। গৃষ্মকালীন সময়ে অরিরিক্ত গরম থেকে স্বস্তি পেতে ও মিটিং এর সময় প্রতিবন্ধকতা এড়াতে এয়ার কন্ডিশনার রাখা জরুরী। বাংলাদেশের মার্কেটে বিভিন্ন ব্রান্ডের এয়ার কন্ডিশনার পাওয়া যাচ্ছে। একটি কনফারেন্স রুমের আকার বা পরিধি অনুযায়ী ১.৫ থেকে ২ টন এসি সেট করা যেতে পারে।
  • কনফারেন্স টেবিলঃ মিটিং বাস্তবায়ন করার জন্য কনফারেন্স রুমের সেন্টারে একটি কনফারেন্স টেবিল সেট করতে হবে। টেবিল টি তে বসে প্রত্যেকেই তার মতামত ও পরিকল্পনা  প্রকাশ করতে পারবে।
  • অফিস চেয়ারঃ কনফারেন্স রুম সেট আপের সময় টেবিলের আকার বিবেচনা করে অফিস চেয়ার সেট করতে হবে। চেয়ার টি মুভেবল অথবা ফিক্সড উভই হতে পারে।পাশাপাশি, মিটিং এ কতজন লোক হতে পারে সেই বিবেচনায় কিছু অতিরিক্ত চেয়ার এর ব্যবস্থাও রাখা যেতে পারে।
  • ফাইল স্টোরেজ স্পেসঃ মিটিং রুমে সাধারনত অতিরিক্ত আসবাবপত্রের প্রয়োজন হয় না তবে একটি স্টোরেজ স্পেস থাকতেই পারে যেখানে মিটিং এর সময় প্রয়োজনীয় ফাইল কিংবা ডকুমেন্টস  গুলো সাজিয়ে রাখা যাবে।

শেষ কথা

পরিশেষে বলা যায় কর্পোরেট মিটিং সম্পাদন করতে একটি আদর্শ কনফারেন্স রুম সেট করা খুবই গুরুত্বপূর্ন। মিটিং এর পারিপার্শিক পরিবেশ এর উপর অনেকাংশেই সফলতা নির্ভর করে। সঠিক স্থান নির্বাচন, শব্দ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা, আধুনিক প্রেজেন্টেশন ডিভাইস, আসবাবপত্র, ও ভালো লাইটিং এর ব্যবস্থার মাধ্যমে আপনার কোম্পানির কনফারেন্স রুমকে সাজিতে তোলা উচিত। এতে করে কোম্পানির জরূরি সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা নিতে সুবিধা হবে।
 

এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: January 30, 2025
Reviews (0) Write a Review