ভূমিকম্প সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে সবচেয়ে আতংকের একটি দুর্যোগ যা প্রায়ই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও ঘটেই চলেছে। বিজ্ঞানীদের মতে ভূমিকম্প সাধারণত ভূপৃষ্ঠে হঠাৎ পরিবর্তন, ভূগর্ভে থাকা টেকটনিক প্লেটের মধ্যে শিলায় শিলায় সংঘর্ষের ফলে আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের কারণে ঘটে থাকে। ভূমিকম্প কখন হবে, কত মাত্রার হতে পারে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কেমন হবে সে বিষয়ে আগে থেকে ধারণা পাওয়া যায় না। তবে এখন থেকে গুগল এলার্ট এর নতুন ফিচারের মাধ্যমে সহজেই ভূমিকম্প সম্পর্কে আগাম সতর্কতা পাওয়া যাবে। যা থেকে ভূমিকম্প শুরু হওয়ার আগেই নিরাপদ দুরত্বে আবস্থান নেওয়া যায়।
ভূমিকম্প সম্পর্কে সকলকে সতর্ক ও নিরাপদ রাখার জন্য সর্ব সাধারণের জন্য অবকাঠামো তৈরী করা অত্যন্ত জটিল ও ব্যয়বহুল। বর্তমান বিশ্বে প্রায় ৩৩০ কোটি এন্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারী রয়েছে এবং ব্যবহারকারীর সংখ্যা বিবেচনায় গুগল ভূমিকম্প এলার্ট সিস্টেমটি এন্ড্রয়েড সিস্টেমে যুক্ত করেছে। যার ফলে এন্ড্রয়েড ব্যবহারীকারীরা সহজেই ভূমিকম্প সম্পর্কে সতর্ক হতে পারে এবং অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবহারকারী ও তার পার্শ্ববর্তী অন্যদেরকে নিরাপদ থাকতে সহয়তা করতে পারবে।
এন্ড্রয়েড ফোনে কীভাবে গুগল আর্থকোয়াক এলার্ট যুক্ত করবেন?
- গুগল আর্থকোয়াক এলার্ট এন্ড্রয়েড ফোনে যুক্ত করার জন্য অবশ্যই মোবাইল ডাটা কিংবা ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে হবে।
- তারপর এন্ড্রয়েড ফোনের সেটিংস অপশনে গিয়ে লোকেশন অপশন সিলেক্ট করতে হবে।
- লোকেশন অপশন থেকে এডভান্স অপশন সিলেক্ট করতে হবে।
- সর্বশেষ আর্থকোয়াক এলার্ট অপশনটি দেখা যাবে এবং চালু রাখার জন্য অন অপশনটি সিলেক্ট করে দিতে হবে।
- এলার্ট চালু রাখার বিপরীতে যে কেউ চাইলে ‘Earthquake near me’ লিখে গুগল সার্চ করেও ঐ সময়ে ভূমিকম্পের অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন গুগল থেকে।
- অথবা লোকেশন অন করে গুলল এর ক্রোম ব্রাউজার থেকে যুক্ত করে নেওয়া। এটি ফোনের সাথে যুক্ত হয়েছে কিনা তা মোবাইলের গুগল লোকেশনে গিয়ে চেক করে দেখা যাবে।
- অথবা সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল দিয়ে গুগল প্লে স্টর থেকে "Earthquake Alert!" নামক অ্যাপস ইন্সটল করে নিলেই একেবারে ঝামেলা মুক্ত। এই অ্যাপসের ভিতরে ভূ-কম্পন উৎপত্তিস্থল থেকে শুরু করে এর মাত্রা কত সেটাও ডিটেক্ট করে এলার্ট দিতে পারে।
কিভাবে গুগল আর্থকোয়াক এলার্ট কাজ করে?
ভূ-কম্পন শুরু হওয়ার আগে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা থেকে সিসমিক তরঙ্গ উৎপন্ন হয়। সিসমিক তরঙ্গের কারণে সিসমোগ্রাফের সেন্সর ট্রিগার দ্রুত ঘুরতে থাকে। পরবর্তীতে সেন্সর ট্রিগার থেকে তরঙ্গকে সংকেত হিসাবে প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে পাঠায়। প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রগুলি অ্যালগরিদমের মাধ্যমে তরঙ্গ সংকেত বিশ্লেষণ করে ভূমিকম্পের অবস্থান, মাত্রা এবং তীব্রতা অনুমান করে গুগল আর্থকোয়েক অ্যালার্ট সিস্টেমে পাঠায়। পরবর্তীতে সিস্টেমটি ব্যবহারকারীকে সতর্ক ও নিরাপদ থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
গুগল আর্থকোয়াক এলার্ট ব্যবহারের সতর্কতা
- এন্ড্রয়েড ডিভাইসটিকে মোবাইল ডাটা কিংবা ওয়াইফাই কানেক্টিভিটির আওতায় থাকতে হবে।
- গুগল আর্থকোয়াক এলার্ট নোটিফিকেশন পাওয়ার জন্য অবশ্যই লোকেশন চালু রাখতে হবে।
- সর্বনিম্ন ৪.৫ এবং তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পে গুগল আর্থকোয়াক এলার্ট সিস্টেম সতর্কতা প্রদান করে।
- হালকা কম্পনে এলার্ট সিস্টেম যে নোটিফিকেশন দেখাবে তা দেখা এবং তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে হবে।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: March 04, 2023