এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হল এর বিশাল অ্যাপভাণ্ডার। আর এগুলো মূলত পাওয়া যায় গুগল প্লে স্টোর-এ। সংখ্যায় তা শত বা হাজার নয়। কয়েক লক্ষ অ্যাপ রয়েছে সেখানে। এতো এতো অ্যাপ এর মধ্যে ১৫টি জনপ্রিয় এবং প্রয়োজনীয় ফ্রি অ্যাপস সম্পর্কে আজ আপনাদের জানাবো।
ক্লিন মাস্টার (Clean Master) : ক্লিন মাস্টার হল একটি টাস্ক ক্লিনার অ্যাপ। এর সাহায্যে আপনি আপনার ফোনের র্যাম ক্লিন করতে পারবেন, অ্যাপ এর ব্যাকআপ নিতে পারবেন। এছাড়াও হোম স্ক্রিনে ক্লিন মাস্টার এর উইজেট সেট করা যায়। যার ফলে হোম স্ক্রিনেই ১ সেকেন্ডে র্যাম খালি করা যায়।
ব্যাটারি ডক্টর (Battery Doctor) : ব্যাটারি ডক্টর হল একটি জনপ্রিয় ব্যাটারি সেভার অ্যাপ। এটি আপনার ব্যাটারি ব্যাকআপ বৃদ্ধি করে। এই অ্যাপটি ব্যাকগ্রাউন্ড এ অপ্রয়োজনীয় রানিং অ্যাপ বন্ধ করে। তাছাড়া ব্যাটারির চার্জ এর পরিমান বিবেচনা করে এটি ফোনকে বিভিন্ন মোড এ পরিবর্তন করে। ফলে ব্যাটারির অপ্রয়োজনীয় চার্জ ক্ষয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পায়।
ফেসবুক (Facebook) : ফেসবুক হল জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ফেসবুক ডট কম এর একটি অ্যাপ। এই অ্যাপটির সাহায্যে আপনি যেকোনো ব্রাউজার এর তুলনায় দ্রুত ফেসবুক ব্রাউজ করতে পারবেন। তাছাড়া অ্যাপটি শুধুমাত্র ফেসবুক ব্যাবহারকারীদের কথা মাথায় রেখে সাজানো হয়েছে তাই এটির ইউজার ইন্টারফেস ও অনেক সহজ এবং সুন্দর।
বাংলা ডিকশনারি (Bangla Dictionary) : ডিকশনারি আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। অনেক সময় অনেক ইংরেজি শব্দের অর্থ আমাদের জানা থাকেনা অথবা আমরা ভুলে যাই। তখন আমাদেরকে ডিকশনারির সাহায্য নিতে হয়। সবসময়তো আর ডিকশনারি সাথে করে নিএ ঘুরা যায় না। কিন্তু আপনি চাইলেই আপনার এন্ড্রয়েড ফোনে একটি ডিকশনারি অ্যাপ ইন্সটল করে নিতে পারেন। এতে করে যেকোনো স্থানেই আপনি ডিকশনারি বের করে স্বল্প সময়ের মধ্যে কোনো শব্দের অর্থ জেনে নিতে পারবেন।
ব্রাউজার (Browser) : ফোনে একটি ব্রাউজার থাকলেও সেখানে সবধরনের সুবিধা পাওয়া যায় না। তাই প্লে স্টোর থেকে আপনি গুগল ক্রোম, মজিলা ফায়ারফক্স অথবা অপেরা মিনি ব্রাউজার ইন্সটল করে নিতে পারেন। এতে করে ইন্টারনেট ব্যাবহার করে আপনি বাড়তি কিছু সুবিধা পাবেন।
শেয়ার ইট (ShareIt) : শেয়ার ইট হল একটি ফাইল ট্রান্সফার অ্যাপ। এর সাহায্যে আপনি ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্লুটুথ এর চেয়ে ৫০ গুণ বেশি গতিতে যেকোনো ফাইল অন্য এন্ড্রয়েড ফোনে সেন্ড করতে পারবেন। তাছাড়া এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি গ্রুপ শেয়ারিংও করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি চাইলে একি সময়ে ৫টি এন্ড্রয়েড ফোনে একি ফাইল শেয়ার করতে পারবেন।
ডাম্পস্টার (Dumpster) : ডাম্পস্টার আপনার ফোনের ডিলিট করা ফাইলগুলো জমা রাখে। ফোন থেকে ডিলিট হওয়া যেকোনো ছবি, ভিডিও, অডিও অথবা ডকুমেন্টস ডিলিট করলে সয়ংক্রিও ভাবে এটি জমা রাখবে। পরবর্তীতে অ্যাপে প্রবেশ করে আপনি আবার সেগুলো আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিতে পারবেন। তাছাড়া অ্যাপটিতে আছে অটোমেটিক ক্লিন সিস্টেম। আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা ঠিক করে দিলে ওই সময়ের পর অবাঞ্ছিত ফাইলগুলো সয়ংক্রিও ভাবে ডিলিট হয়ে যাবে।
ফটোএডিটর (Photo Editor) : প্লে স্টোর এ অনেক ফটো এডিটর রয়েছে। তার মধ্যে ফটর (Fotor) , পিক্সআরট (picsart), ফটো স্টুডিও (photo studio) অ্যাপগুলো জনপ্রিয়। এই অ্যাপগুলোর মাধ্যমে আপনি যেকোনো ছবি এডিট করতে পারবেন। যেমন ছবির উপর কোন কিছু লিখা, ছবিতে বিভিন্ন এফেক্ট দেওয়া ইত্যাদি। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরা অ্যাপও আছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন এফেক্ট এ ছবি তুলতে পারবেন। যেমন রেট্রিকা, ক্যান্ডি ক্যাম ইত্যাদি।
হোয়াটস অ্যাপ (WhatsApp) : হোয়াটস অ্যাপ হল একটি বিনামূল্যে মেসেজিং সেবা। এর মাধ্যমে আপনি চেটিং, ভিডিও অডিও অথবা ছবি বিনামূল্যে সেন্ড করতে পারবেন।
লাউঞ্চার (Launcher) : ফোনের একি থিম দেখতে দেখতে আমরা অনেক সময় বিরক্ত হয়ে যাই। তাই মাঝে মাঝে একটু নতুনত্ব আনতে পারেন বিভিন্ন লাউঞ্চার ব্যাবহার করে। যেমন সল লাউঞ্চার (Solo launcher), নেক্সট লাউঞ্চার (Next launcher), গো লাউঞ্চার (Go launcher) ইত্যাদি। এগুলোর মাধ্যমে আপনি ফোনের হোম স্ক্রিন, অ্যাপ ড্রয়ার, আইকন, অ্যাপ লেবেল ইত্যাদি কাস্টমাইজ করতে পারবেন। ফোনে নতুন একটা লুক আনা সম্ভব।
ভাইবার (Viber) : ভাইবার হল একটি ফ্রি অডিও এবং ভিডিও কলিং অ্যাপ। ভাইবার এর মাধ্যমে আপনি বিশ্বের যেকোনো স্থানে অডিও এবং ভিডিও কল করতে পারবেন ফ্রিতে এবং এটি ডিজিটাল ভয়েজ ট্রান্সফার করে। ফলে অত্যন্ত ক্লিয়ার কথা শোনা যায়।
ইমো (Imo) : ইমো অ্যাপটিতেও ভাইবারের মত অডিও এবং ভিডিও কল করা যায়। তবে এর সুবিধা হল এটি ভিডিও কলিং এ কম ডাটা খরচ করে এবং ২জি নেটওয়ার্কেও ভিডিও কল করা যায়।
ইসলামিক কিবলা এন্ড প্রেয়ার টাইম ( Islamic Qibla and Prayer Time) : ইসলামিক কিবলা এন্ড প্রেয়ার টাইম হল একটি জনপ্রিয় ইসলামিক অ্যাপ। এটি নামাজের সময় হলে তা মনে করিয়ে দেয়।
ক্যাম কার্ড (Cam Card) : ক্যাম কার্ড হল ব্যাবসায়ী বা চাকুরীজীবীদের জন্য একটি দরকারি অ্যাপ। এটি ভিজিটিং কার্ড স্ক্যান করে তা ডিজিটাল ফরম্যাট এ পরিবর্তন করে নেয়। ফলে মানিব্যাগে বা পকেটে কার্ড রাখার কোন প্রয়োজন হয় না। চাইলেই মুহূর্তের মধ্যে যেকোন কার্ড খুঁজে বের করা যায়।
স্পিড টেস্ট (Speed Test) : স্পিড টেস্ট মূলত মোবাইলের ইন্টারনেট এর ডাটা ট্রান্সফার রেট এর হিসাব করে থাকে। আপনার ইন্টারনেট এর স্পিড এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি দেখতে পারবেন।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: March 03, 2015