আধুনিক বিশ্বে বিদ্যুৎ শক্তির ব্যাতিক্রম কিছু নেই। কিন্তু ক্রমবধর্মান বৈদ্যুতিক চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা সহজ নয়। এমতাবস্থায় বিদ্যুৎ সংরক্ষন করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আর এক্ষেত্রে প্রযুক্তির দ্বারগ্রস্থ হতেই হবে। সম্প্রতি ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডাচ প্রযুক্তিবিদ চিন্তন শাহ উদ্ভাবন করলেন এমনই একটি ডিভাইস সিস্টেম-'স্মার্ট সড়ক বাতি'। চমৎকার এই সড়ক বাতিটির নাম 'টিভিলাইট'। এর বৈশিষ্ট্য হলো সড়কে কারও উপস্থিতি টের পেলেই এটি জ্বলে উঠবে। আবার যখন কেউ থাকবে না তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। শুধু মানুষ বা যাত্রীবাহী গাড়ির উপস্থিতিতেই না বরং এম্বুল্যান্স , সাইকেল, বা ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ির চলাচলেও এটি অত্যন্ত কর্মক্ষম।এর আরেকটি সুবিধা হচ্ছে প্রয়োজন মত এর আলোর তীব্রতা বাড়ানো বা কমানো যাবে। আবার আবহাওয়ার উপর নির্ভর করেও এটি নিয়ন্ত্রিত হবে;যেমন কুয়াশা বা ভারি বষর্নে প্রয়োজনমত আলো বাড়িয়ে দেয়া। যেকোন যান্ত্রিক গলোযোগ তৈরি হলে ভয়েস কমান্ড বা ই-মেইলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মহলকে অভিহিত করার সুবিধাও এতে যুক্ত করা হয়েছে। চিন্তন শাহ এক পত্রিকা মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন,নেদারল্যান্ডস এর ডেলফট ইউনিভাসির্টি অফ টেকনোলজিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি এই সড়ক বাতি উদ্ভাবন করেছিলেন। তার মূল উদ্দেশ্য ছিলো উন্নত দেশগুলোর ক্রমবধর্মান বিদ্যুতের বাড়তি খরচ কমিয়ে সেই অর্থ অনুন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর উন্নতিতে ব্যায় করা।
গবেষকদের মতে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন এবং ব্যবহারে তুলনামূলক সহজ হওয়ায় উন্নত দেশগুলোর 'সেন্ট্রাল সিটি ম্যানেজমেন্ট' প্রোজেক্টের আওতায় অনায়াসেই এটিকে ব্যাবহার করা সম্ভব। তারা এই টিভিলাইট স্মার্ট সড়ক বাতিটির নাম দিয়েছেন 'সিটি সেনর'। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে ,ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে বিদ্যুৎ খাতে ৮০ শতাংশ খরচ হয়। যা মূল বাজেটের ৫০ শতাংশ বেশী এবং যার বাজার মূল্য ১০ বিলিয়ন ইউরো বা ১৩ বিলিয়ন ডলার। বিশ্লেষকদের ধারনা এই স্মার্ট সড়ক বাতিটি ব্যবহারের ফলে এই খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনা যাবে। নতুন উদ্ভাবিত টিভিলাইট সড়ক বাতি ইতিমধ্যে হল্যান্ডের ৪টি ও আয়ারল্যান্ডের একটি পৌর শহরে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: November 24, 2013