সাম্প্রতিক একটি গবেষক দল দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এক ধরনের অনুজীবের জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে, এই অনুজীব প্রায় ২.২ বিলিয়ন বছর পুরানো। ইউনিভার্সিটি অফ অরেজেন এর এই গবেষক দলটি দাবী করছে এই অনুজীবগুলো পৃথিবীতে পাওয়া এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে পুরানো অনুজীব থেকেও চার গুন বেশী পুরাতন। নতুন উদ্ভাবিত এই অনুজীব প্রজাতিটির নাম রাখা হয়েছে Diskagma buttonii। আকৃতিতে সাধারণ অনুজীবের থেকেও এরা ক্ষুদ্র এবং সঙ্ঘবদ্ধভাবে সুতিকাকৃতিতে এরা বসবাস করে। তবে এখনও পর্যন্ত এদের জৈবিক কার্যাবলী সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায় নি। ধারনা করা হচ্ছে, এই অনুজীবগুলো আধুনিককালে বিদ্যমান Geosiphon নামক ফাংগাসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। গবেষক দলটি জানিয়েছে, এই অনুজীবগুলো মুলত এক নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট সরল এককোষী প্রাণী। বিশিষ্ট ভূতত্ত্ববিদ এবং গবেষক গ্রেগরী জে. রিটেলাকের মতে পৃথিবীর আবহাওয়া ও পরিবেশের উন্নতির উপর এই অনুজীবগুলোর বিশেষ প্রভাব রয়েছে। প্রায় ৫০০ মিলিয়ন বছর পূর্বে এই অনুজীবগুলো পৃথিবীতে অক্সিজেন উৎপন্ন করে। শুধু তাই নয়, এই প্রজাতিটি নতুন এবং বহুকোষী উদ্ভিদ ও প্রাণী সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ইতোপূর্বে সমসাময়িক সায়ানব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পাওয়া গেলেও ফাংগাস প্রজাতির অনুজীবের সন্ধান পাওয়া গেলো এই প্রথম। রিটেলাক জানান, যদি এটা সুনির্দিষ্টভাবে প্রমানিত হয় যে এই অনুজীবগুলোর জীবাশ্ম ২.২ বিলিয়ন বছর পুরানো এবং সেইসাথে যদি এদের জৈবিক কার্যকালাপের সঠিক তথ্য পাওয়া যায় তবে পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টি এবং বিকাশ এর অনেক রহস্যের সমাধান হবে। কারন ২.৪ বিলিয়ন বছর থেকে ২.২ বিলিয়ন বছর সময়কালটি অক্সিডেশন ইভেন্ট অথবা অক্সিজেন উৎপন্ন কাল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তাই ওই সময়ের বাসিন্দা হিসেবে এই অনুজীবগুলোর ভূমিকা বিস্তর। বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ার লওরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাবরটোরিতে এই অনুজীবের জীবাশ্ম নিয়ে ব্যাপক পরীক্ষণ চলছে। ইতিমধ্যে জানা গেছে এদের সুনির্দিষ্ট কোন আকৃতি নেই।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: July 30, 2013