সময়ের সাথে সাথে যেমন প্রযুক্তির পরিবর্তন ঘটেছে ঠিক তেমনি পরিবর্তন ঘটেছে ডেস্কটপ পিসির। কিছুদিন আগেও যে সকল প্রযুক্তি মানুষের কল্পনার বাহিরে ছিলো আজকে তা খুব সহজেইই ব্যবহার করতে পারছে। ডেস্কটপ পিসি এমন একটি ডিভাইস যা ব্যবহার করে যেকোন ধরনের কাজ খুব সহজেই করা যায়। আর এর জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত পিসি। এই পিসি সাধারণত দুইভাবে পাওয়া যায় তার মধ্যে একটি হচ্ছে ব্র্যান্ড পিসি যা সরাসরি বাজার থেকে পূর্ণাঙ্গ আকারে পাওয়া যায়। অন্যটি হচ্ছে পিসি বিল্ড বা নিজের চাহিদা অনুযায়ী পিসি তৈরি করা। আজকে আমরা জানবো মাত্র ৩০ হাজার টাকার মধ্যে ডেস্কটপ পিসি সর্ম্পকে। ডেস্কটপ পিসি বানাতে হলে যেসকল পিসি পার্টস লাগবে তা হল প্রসেসর, মাদারর্বোড, স্টোরেজ, র্যাম, কেসিং, এবং গ্রাফিক্স কার্ড। এবার জেনে নেওয়া যাক যে পিসি তৈরিতে পিসি পার্টস এর ভুমিকা কি?
প্রসেসরঃ যেকোন পিসির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর মধ্যে একটি হলো প্রসেসর। এটিকে কম্পিউটারের ব্রেইনের সাথে তুলনা করা হয়। কারণ কম্পিউটারের যত ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহন, ডেটা প্রসেসিং এবং হিসাব নিকাশের কাজ রয়েছে সব এটির প্রসেসর করে থাকে। বাজারের সেরা পিসি প্রসেসর গুলো হচ্ছে ইন্টেল ও এএমডি যা দীর্ঘদিন ধরে আছে । তবে এদের মধ্যে কোনটি সেরা তা এক মাত্র ব্যবহারকারীরাই যার যার ইচ্ছে অনুযায়ী নির্ধারণ করে থাকে। প্রসেসর নির্মাতা হিসেবে দুটি কোম্পানির রয়েছে বিশ্বব্যাপী সুনাম আপনিও চাইলে আপনার খুশি মতো যে কোন একটি ব্যবহার করতে পারেন। এদের অনেক ভালো ভালো প্রসেসর থাকলেও যেহুতু আমাদের বাজেট নির্ধারিত তাই আমরা খুব বেশি দূর যেতে পারবো না যদি কারো ইন্টেল প্রসেসরের দিকে ঝোক থাকে তাহলে এই বাজেটের মধ্যে সেরা হতে পারে ইন্টেল কোর আই ৩, ১০ জেনারেশনের প্রসেসরটি যার বর্তমান বাজার মূল্য ১১,৪০০ টাকা মাত্র। এবং কারো যদি এমএমডির দিকে ঝোক থাকে তাহলে তাদের জন্য সেরা হতে পারে এমএমডি রাইজেন ৩, ৩য় জেনারেশনের প্রসেসরটি যার বর্তমান বাজার মূল্য ১৫,৯০০ টাকা।
মাদারবোর্ডঃ কম্পিউটারের মাদারবোর্ডের কাজ হচ্ছে প্রতিটি পার্টসকে এক সাথে রাখা। এটি ছাড়া কোন কম্পিউটারই পরিপূর্ণ নয়। বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানির মাদারবোর্ড কিনতে পাওয়া যায় তার মধ্যে গিগাবাইট ও আসুস অন্যতম সেরা মাদাবোর্ড প্রস্তুতকারক কোম্পানি। আমরা যদি আমাদের বাজেটের মধ্যে কিনতে চাই তাহলে গিগাবাইট GA-H110M-S2 মাদারবোর্ডটি সেরা হতে পারে। এটির বর্তমান বাজার মূল্য মাত্র ৫,৬০০ টাকা।
স্টোরেজঃ কম্পিউটারের তথ্য জমা রাখার জন্য কোন না কোন স্টোরেজ ডিভাইসের দরকার হয়। সাধারণত দুই ধরনের স্টোরেজ আমরা দেখে থাকি একটি হলো হার্ডডিস্ক ড্রাইভ অন্যটি এসএসডি। পার্ফমেন্সের দিক দিয়ে দেখতে গেলে এসএসডি হার্ডডিস্কের তুলনায় কয়েকগুণ ভালো পার্ফমেন্স দিয়ে থাকে। তাই সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ২৪০ জিবি এসএসডির সাথে ১ টেরাবাইট হার্ডডিস্ক দুইটা এক সাথে লাগানো এবং শুধু সিস্টেম সফটওয়্যারগুলো এসএসডিতে রাখা বাকিগুলো হার্ডডিস্কে এতে করে পার্ফমেন্সও পাওয়া যাবে আবার যথেষ্ট স্টোরেজও। ২৪০ জিবি এসএসডির বর্তমান বাজার মূল্য ২৪০০ টাকা এবং ১ টেরাবাইট তুশিবা P300 হার্ডডিস্কের দাম ৩৪০০ টাকা।
র্যামঃ কম্পিউটারের প্রতিটা প্রোগ্রাম রান করার জন্য অবশ্যই একটি অস্থায়ী মেমরির দরকার হয়। র্যাম সেই অস্থায়ী মেমরির দায়িত্ব পালন করে। পিসিতে এক সাথে কতগুলো প্রোগ্রাম রান করতে পারবে তা অনেকটাই নির্ভর করে র্যামের উপর। তাই র্যাম একটু বেশি হওয়া সবসময়ই ভালো। তবে আমরা যে বাজেটের কথা চিন্তা করেছি সেটা দিয়ে ৮ জিবি পর্যন্ত র্যাম নেওয়া যাবে। এই ধরনের র্যাম এর বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ৩,৫০০ টাকা।
কেসিং: মূলত কম্পিউটারের সমস্ত পার্টসগুলোকে একটি বক্সের মধ্যে সুরক্ষিত ও সুসজ্জিত রাখার জন্য কেসিং ব্যবহার করা হয়। সাধারণত কেসিংয়ের সাথে পাওয়ার সাপ্লাই দেওয়া থাকে তারপরও আপনি যদি আরো ভালোটা লাগাতে চান সেটাও আলাদা ভাবে কিনে লাগাতে পারবেন। সাধারণত ভাল কেসিং এর বাজার মূল্য ৪ হাজার টাকা।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: September 28, 2021