অ্যাকোয়াপনিক্স হচ্ছে অ্যাকুয়াকালচার ও হাইড্রপনিক্সের সমন্বয়ে গঠিত একটি চাষাবাদ পদ্ধতি। অ্যাকুয়াকালচার ও হাইড্রপনিক্স পদ্ধতি ২টিরই একটি নেতিবাচক দিক রয়েছে। হাইড্রপনিক্সে গাছপালার জন্য প্রচুর পুষ্টি ও পর্যায়ক্রমিকভাবে পানি পরিষ্কারের প্রয়োজন হয়। অ্যাকুয়াকালচারে বাড়তি পুষ্টি প্রতিনিয়ত অপসারণ করতে হয়। অ্যাকুয়াকালচার ও হাইড্রপনিক্স পদ্ধতিকে যখন সমন্বয় করা হয় তখন এই নেতিবাচক দিকগুলো ইতিবাচক দিকে পরিণত হয়। অ্যাকোয়াপনিক্স পদ্ধতিতে খুবই সাধারণ বা জটিলভাবে চাষাবাদ করা যায়। একটি কন্টেইনার বা অন্য যেকোনো পাত্রে গাছ লাগিয়ে গ্রোবেড তৈরি করতে হয়। পাম্পের সাহায্যে মাছের ট্যাংক থেকে পানি সরবরাহ করা হয়। পানি মিডিয়ার মাধ্যমে চুয়ে চুয়ে গাছের শিকড়ে পৌঁছে এবং পরবর্তীতে আবার মাছের ট্যাংকে স্থানান্তরিত হয়। গাছগুলো নিষ্কাশনের মাধ্যমে পানি থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিয়ে নেয় এবং পানিকে পরিষ্কার করে মাছের জন্য উপযোগী করে তোলে। গ্রোবেড মিডিয়ার পৃষ্ঠে ব্যাকটেরিয়া থাকে। ব্যাকটেরিয়াগুলো মাছের অ্যামোনিয়া বর্জ্যকে নাইট্রেটে রুপান্তরিত করে যা গাছের জন্য ভালো। এই রুপান্তরের প্রক্রিয়াটিকে নাইট্রোজেন সাইকেল বলা হয়। কাদামাটির নুড়ি দ্বারা গ্রোবেড ভরাট করা অ্যাকোয়াপনিক্স পদ্ধতিতে চাষাবাদের প্রচলিত নিয়ম। তবে এছাড়াও আরও নিয়ম আছে। হাইড্রপনিক্সের যেকোনো পদ্ধতিই অ্যাকোয়াপনিক্সে ব্যবহার করা যায়। অ্যাকোয়াপনিক্স পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষ করা যায়। এই পদ্ধতিতে যথেষ্ট পরিমাণ মাছের চাষ করা যায় এবং রিসারকুলেটিং সিস্টেমের কারনে খুব কম পানির প্রয়োজন হয়। গবেষণায় দেখা গেছে মাটিতে শাকসবজি চাষ করতে যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন হয়, তার ১০ ভাগের ১ ভাগ পানি লাগে অ্যাকোয়াপনিক্স পদ্ধতিতে। অ্যাকোয়াপনিক্স পদ্ধতির কার্যক্ষমতা অনেক বেশি। ৮এম বাই ৪এম একটি যায়গায় ৬ মাসে ৫০ কেজি মাছ এবং কয়েকশ কিলোগ্রাম শাকসবজি উৎপাদন করা সম্ভব। অ্যাকোয়াপনিক্স পদ্ধতিতে চাষের জন্য নিড়ানি বা সারের প্রয়োজন পরেনা। খুবই স্বল্প সময় ও শ্রমের বিনিময়ে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা যায়।