বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক বাংলাদেশের পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম স্থান। এটি গাজীপুর সাফারি পার্ক নামেও পরিচিত। পুরো পার্কটি ৪০০০ একর জমি নিয়ে অবস্থিত। বর্তমানে ৩১ প্রজাতির স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পশু এখানে দেখা যায়। এই পার্কটি পরিদর্শনের মাধ্যমে পর্যটকরা কিছুটা হলেও আফ্রিকার বন্য জগৎ সম্পর্কে ধারনা অর্জন করতে পারে। শালবন, বন্যপ্রাণি বিষয়ক অধ্যয়ন এবং উদ্ভিদ বৈচিত্র্য গাজীপুর সাফারি পার্কের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাছাড়া ভোজ্য ফল, পশুখাদ্য এবং মিশ্র প্রজাতির বাগান রয়েছে এখানে। আরও আছে বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী যেমনঃ বাঘ, সাম্বার হরিণ, মায়া হরিণ, হরিণ, শূকর হরিণ, বনবিড়াল, বানর, শিয়াল, বেঁজি, খেঁকশিয়াল এবং অন্যান্য তৃণভোজী ও স্তন্যপায়ী প্রাণী। এসব বন্য প্রাণী এখানে প্রজনন ও সংরক্ষণ করা হয়। পার্কটির ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদকূলের বিভিন্ন বৈচিত্র্য সংরক্ষিত আছে। সাফারি পার্কের ভিতরে সুরক্ষিত বাস যাত্রায় প্রাকৃতিক পরিবেশে বাঘ, সিংহ, হাতি, ভালুক, ভালুক, গয়াল, কুমির ও নানা জাতের প্রাণী দেখা যায়। পর্যটকরা মনোমুগ্ধকর লেক ও অসংখ্য জলজ পাখি দেখতে পারে। এর পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে বন ও বন্যপ্রাণীর নাটুকে সৌন্দর্য অনুধাবন করা যায়।
কোর সাফারি পার্কে বাস ছাড়া প্রবেশ নিষেধ কিন্তু গাড়িতে প্রাকৃতিক পরিবেশ, বন্যপ্রাণি বিষয়ক অধ্যয়ন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন বিনামূল্যে করা যায়। কোর সাফারি পার্ক ১৩৩৫ একর জমি নিয়ে গঠিত। এখানে আছে টাইগার হাউস, লায়ন সাফারি, লেপার্ড হাউস ইত্যাদি আকর্ষণীয় স্থান।
সাফারি কিংডমে ভ্রমণকারীরা পাদদেশের চারপাশে চলাফেরা করতে পারে এবং পশুগুলোকে ছোট বেস্টনীর মধ্যে আবদ্ধ রাখা হয়। সাফারি কিংডমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বন্যপ্রাণি বিষয়ক অধ্যয়ন-সম্পর্কিত শিক্ষা, বন্য প্রাণী পর্যটকদের বিনোদন ও গবেষণার সুযোগ করে দেয়া। তাছাড়া এখানে আরও আছে ন্যাচারাল স্ক্যানিং সেন্টার, জীববৈচিত্র্য পার্ক, এক্সটেনসিভ এশিয়ান সাফারি পার্ক, গেট হীল, ছোট পাখির বাসা, কার্প গার্ডেন ইত্যাদি।
অবস্থান
পার্কটি ঢাকা শহরের গাজীপুর জেলায় অবস্থিত।
কিভাবে যাবেন
প্রথমে গাজীপুর চৌরাস্তায় যেতে হবে। তারপর ময়মনসিংহ রাস্তা বরাবর এগিয়ে বাঘের বাজারে যেতে হবে। ঢাকা থেকে বাঘের বাজারের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। এরপর রিক্সা বা সিএনজির মাধ্যমে সাফারি পার্কে খুব সহজেই যাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে বাঘের বাজারের বাস ভাড়া
সাধারণ – ৫০ টাকা
সিটিং – ৮০ টাকা
পার্কে ঢোকা এবং পরিদর্শন খরচ
ফী – বড়দের জন্য ৫০ টাকা, ছোটদের জন্য ২০ টাকা, বিদেশীদের জন্য ৪৫০ টাকা, ৪০-১০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৪০০ টাকা এবং ১০০র বেশি হলে ৮০০ টাকা। (আগাম অনুমুতির নিতে হবে।)
এসি বাসে করে সাফারি – প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১০০ টাকা, ছোটদের জন্য ৫০ টাকা (বাসটি বাঘ ও সিংহের এলাকায় নিয়ে যাবে। সম্পূর্ণ সুরক্ষার ব্যবস্থা আছে।)
জঙ্গল পরিদর্শন – ১০ টাকা
পাখি দেখা – ১০ টাকা
পয়া চালিত নৌকায় ওঠা – ৫০ টাকা
হোটেল
টাইগার রেস্টুরেন্ট, লায়ন রেস্টুরেন্ট এবং আরও অনেক রেস্টুরেন্ট আছে।
খোলার সময়
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন
মঙ্গলবার
পারকিং ফি
প্রতি বাস/ট্রাক – ২০০ টাকা
প্রতি মিনিবাস/মাইক্রবাস – ১০০ টাকা
প্রতি গাড়ি – ৬০ টাকা
প্রতি রিক্সা – ২০ টাকা
নির্দেশনা
১। যেকোনো ময়লা ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।
২। শব্দ করা যাবেনা।
৩। কোন প্রাণীকে খাবার দেয়া যাবেনা।
৪। কোন প্রাণীকে বিরক্ত করা যাবেনা।
৫। রেস্ট হাউস ব্যবহার করার পূর্বে অনুমুতি নিতে হবে।
৬। শৃঙ্খলার সাথে যানবাহন পার্ক করতে হবে।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: January 26, 2016