bdstall.com

কম দামে এয়ার কন্ডিশনার কেনার 10 টি টিপস

 

অল্প দামে ভালো এসি কেনার ১০ টি টিপস

অল্প দামের ভালো এসি কেনার জন্য কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এসি কেনার পর মাথায় হাত দেয়ার থেকে এসি কেনার পূর্বেই এসব বিষয় সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। নিচে এসি কেনার বায়িং গাইড এবং কিছু টিপস উল্লেখ করে দিয়েছি যা এয়ার কন্ডিশনার নেয়ার পূর্বে অবশ্যই জানা উচিত।

 

অল্প দামের মাঝে ভালো এসি কিনতে চাচ্ছেন? পূর্বে এসি কেনার অভিজ্ঞতা না থাকলে নতুন করে এসি কেনার সময় অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হতে পারেন। তবে, অল্প দামের ভালো এসি কেনার টিপস জানা থাকলে নিশ্চিন্তে ভালো মানের এসি কিনতে পারবেন আপনার বাজেটের মাঝেই।


তীব্র গরমে সিলিং ফ্যান দিয়েও যখন ঘর ঠান্ডা করা সম্ভব হচ্ছেনা, তখন একমাত্র উপায় হিসেবে অনেকেই এসি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। কিন্তু, এসি কিনতে হবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েই যদি এসি কিনতে চলে যান, তাহলে পরবর্তীতে গুরুতর কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।

 

অল্প দামের ভালো এসি কেনার টিপস

এছাড়া, এসি যেহেতু একটি লং টাইম বাজেটের জিনিস, তাই ভেবে চিন্তে কিনতে হবে। আজ আপনাদের সাথে অল্প দামের ভালো এসি কেনার টিপস নিয়ে আলোচনা করবো। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে এসি কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি তা সম্পর্কে পূর্নাঙ্গ ধারণা পাবেন।


বাজেট নির্ধারণ করুন

এসি কেনার পূর্বে অবশ্যই আপনার বাজেট নির্ধারণ করতে হবে। এসি বিভিন্ন দামের হয়ে থাকে। এসির বিভিন্ন সুবিধা এবং সাইজের উপর নির্ভর করে এসির দাম নির্ধারিত হয়ে থাকে। ০.৫ টন, ১ টন, ১.৫ টন সহ বিভিন্ন ধরনের এসি হয়ে থাকে। আপনার যে এসিটি প্রয়োজন সেটি নির্ধারণ করার পর উক্ত এসির দাম অনুযায়ী বাজেট নির্ধারণ করতে হবে।
মনে করুন আপনি যে ঘরে এসি লাগাতে চাচ্ছেন, সেখানে ০.৫ টন এসি হলেই হয়ে যাবে। কিন্তু, সেখানে যদি ১ টন বা ১.৫ টন এসি কিনেন, তাহলে অধিক অর্থ ব্যয় হবে। তাই, আপনি কোন এসিটি কিনতে চাচ্ছেন সেটির দাম অনুযায়ী বাজেট নির্ধারণ করুন।

 

ঘরের সাইজ মাথায় রাখুন

যেমনটা একটু আগেও বলেছি, ঘরের সাইজ অনুযায়ী এসি কিনতে হবে। একটি বিশাল বড় ঘরের জন্য যদি ০.৫ টন কিংবা ১ টন এসি কিনেন, তাহলে কিন্তু এই এসির পক্ষে পুরো ঘর ঠান্ডা করা সম্ভব হবেনা। আবার, আপনার ঘর অনেক ছোট কিন্তু ২ টন এসি কিনলেও অনেক বেশি ঠান্ডা হবে। এতে আপনার অর্থ খরচ হবে বেশি কিন্তু বেশি সুবিধা পাবেন না।


ঘরের সাইজ অনুযায়ী কত টন এসি কিনতে হবে তা নিচের তালিকা থেকে ধারণা নিতে পারবেন-
1. 100 বর্গফুট পর্যন্ত: 0.75/0.8 টন বা 1 টন এসি যথেষ্ট।
2. 100-200 বর্গফুট: 1 টন এসিই আপনার রুমকে ঠান্ডা রাখতে পারবে।
3. 201-300 বর্গফুট: 1.25 বা 1.5 টন এসি লাগবে।
4. 301-500 বর্গফুট: 1.5 টন এসি আপনার রুমের জন্য উপযুক্ত।
এসি কেনার পূর্বে আপনার ঘরটি কত বর্গফুট তা হিসেব করে নিন। এরপর, কত টন এসি হলে আপনার ঘর ঠান্ডা হবে সেটি সহজেই বের করতে পারবেন। সে অনুযায়ী এসি কিনলে আপনাকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হবেনা।

 

ঘরের মেঝে কেমন হবে

নিচতলায় ঘরের মেঝে সাধারণত ঠান্ডা থাকে। তাই, মেঝে গরম হওয়ার সুযোগ নেই বা কম বললেই চলে। তাই, শুধু ঘরের সাইজ বিবেচনা করে এসি কেনা যায়। কিন্তু, আপনি যদি বাসার উপরের তলায় থাকেন, যেটি একদম বাসার ছাদের নিচেই অবস্থিত, তাহলে আপনার ঘরের মেঝে গরম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বেশি। তাই, সাধারণের তুলনায় আপনাকে একটু বড় সাইজের এসি কিনতে হবে।
কারণ, মেঝে যদি গরম হতে থাকে তাহলে ছোট সাইজের এসি সহজেই ঘর ঠান্ডা করতে পারবে না। এজন্য, একটু বড় সাইজের এসি কিনতে হবে।

 

উইন্ডো এসি নিবেন নাকি স্প্লিট এসি

এসি দুই ধরনের হয়ে থাকে। উইন্ডো এসি এবং স্প্লিট এসি। যদিও স্প্লিট এবং উইন্ডো এয়ার কন্ডিশনার একই রকম কাজ করে, তবে তাদের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। যেমন - উইন্ডো এসি স্প্লিট এসির চেয়ে অনেক কম দামে পাওয়া যায়। স্প্লিট এসি যেখানে খুশি বসানো যেতে পারে। কিন্তু উইন্ডো এসি বসানোর জন্য জানালার প্রয়োজন হয়।
স্প্লিট এসি উইন্ডো এসির চেয়ে কম বিদ্যুৎ খরচ করে। স্প্লিট এসি উইন্ডো এসির চেয়ে অনেক কম শব্দ করে। স্প্লিট এসি উইন্ডো এসির চেয়ে ঘর দ্রুত ঠান্ডা করে। স্প্লিট এসি দেখতে অনেক সুন্দর এবং আধুনিক হয়ে থাকে যা আপনার ঘরের সৌন্দর্য বর্ধন করবে। অপরদিকে উইন্ডো এসি বেশি জায়গা নেয় এবং তত বেশি সুন্দর না।

 

এসির কয়েল যাচাই করুন

অনেকে এসি কেনার সময় শুধুমাত্র ব্র্যান্ড, দাম, এবং ক্ষমতা বিবেচনা করেন। কিন্তু এসি কেনার সময় কয়েলের ধরনও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কপার কয়েল এবং অ্যালুমিনিয়াম কয়েল - দুই ধরনের কয়েলই এসিতে ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘস্থায়িত্ব, রক্ষণাবেক্ষণ, এবং দ্রুত ঠান্ডা করার ক্ষেত্রে কপার কয়েল অ্যালুমিনিয়াম কয়েলের চেয়ে অনেক ভাল।

 

পাওয়ার সেভিং রেটিং যাচাই করুন

সি কেনার সময় অনেকেই শুধু দামের দিকে নজর দেন। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী খরচ বিবেচনা করলে পাওয়ার সেভিং রেটিংও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কম পাওয়ার সেভিং রেটিং (স্টার) আছে, এমন এসি কিনলে দাম কম হবে। কিন্তু বিদ্যুৎ খরচ বেশি হবে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে আপনার খরচ বেড়ে যাবে।
অন্যদিকে, বেশি পাওয়ার সেভিং রেটিং (স্টার) আছে, এমন এসি দাম বেশি হলেও বিদ্যুৎ খরচ কম হবে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে আপনার টাকা সাশ্রয় হবে। সুতরাং, এসি কেনার সময় শুধু দামের দিকে না তাকিয়ে পাওয়ার সেভিং রেটিংও অবশ্যই বিবেচনা করুন। বেশি স্টার (পাওয়ার সেভিং রেটিং) আছে, এমন এসি কিনলে আপনার টাকা সাশ্রয় হবে।

 

বিডিস্টলে এসির দাম যাচাই করুন

অফলাইনে এসি কেনার সময়, দোকানের সেলসম্যান আপনাকে বিভিন্ন মডেল রেকমেন্ড করবে। কিন্তু সবসময় সব সেলসম্যান বিশ্বস্ত হয় না। সেলসম্যান যে মডেলগুলো রেকমেন্ড করবে, সেগুলো এসির দাম বিডস্টল থেকে চেক করে নিন। অনলাইনে যদি সেই এসিগুলোর দাম কম দেখেন, তাহলে সেলসম্যানকে জানান। 


সেলসম্যান যদি অনলাইনের দামে এসি বিক্রি করতে রাজি না হয়, তাহলে অনলাইন থেকেই কিনে নিন। এছাড়া, অনলাইনে এসি কেনার সময় বিভিন্ন পেমেন্ট মেথড দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবেন। যা থেকে ডিস্কাউন্ট পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া, কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করলে অনেক ছাড় পাওয়া যায়। আপনি চাইলে অনলাইন থেকে ইএমআই মেথডে কিস্তিতে এসি কিনতে পারবেন।

 

সার্ভিস সেন্টার কেমন যাচাই করুন

এসি কেনা থেকে শুরু করার পরেও অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। এসির দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং সুষ্ঠু কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত সার্ভিসিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, কোনো ত্রুটি দেখা দিলে দ্রুত রিপেয়ারের প্রয়োজন হয়।
এই দিক থেকে ব্র্যান্ডের সার্ভিস সেন্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভালো সার্ভিস সেন্টার থাকলে নিয়মিত সার্ভিসিং এবং রিপেয়ার করা সহজ হবে। তাই আপনি যে ব্রান্ডের এসি কিনছেন, সেই ব্রান্ডের বিক্রয়োত্তর সেবা কেমন সেটি যাচাই করে নিন। এজন্য, অনলাইনে তাদের বিক্রয়োত্তর পরিষেবা সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

 

কনডেনসার ও কমপ্রেসর দেখে কিনুন

এসি কেনার সময় শুধু ব্র্যান্ড, দাম, এবং ক্ষমতা বিবেচনা করলেই হবে না। দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং ভালো পারফরম্যান্সের জন্য কনডেনসার এবং কম্প্রেসরও গুরুত্বপূর্ণ।


কনডেনসার: পিওর কপারের তৈরি কনডেনসার দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ভালো তাপ পরিবাহন করে। 4-7 মিলিমিটার ব্যাসের কনডেনসার মোটা ব্যাসের তুলনায় বেশি কার্যকরী। টিউবের ভেতরে ফিন থাকলে কনডেনসারের কার্যক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পায়।

 

সতর্কতা 

এসি কেনার সময় আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন এবং লোভনীয় অফারের ফাঁদে পা দেওয়া উচিত নয়। কম দামের ওয়াই-ফাই এবং বিভিন্ন ফিচারের প্রলোভনে এমন এসি কিনলে পরবর্তীতে পস্তাতে হতে পারে।
এসি কেনার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত:
• এসি কতটা টেকসই তা নিশ্চিত করতে হবে। বাজারে অনেক এসি থাকে যা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
• বিদ্যুৎ খরচ কমাতে উচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী রেটিং (স্টার) আছে, এমন এসি কিনতে হবে।
• এসি কত দ্রুত ঘর ঠান্ডা করতে পারে তা জেনে নিতে হবে।
• যে ব্র্যান্ডের এসি কিনছেন তার বিক্রয় পরবর্তী পরিষেবা কেমন তা খোঁজখবর নিতে হবে।

 

এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: February 15, 2024
Reviews (0) Write a Review