বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে বাসা-বাড়ি, অফিসের গরম এবং আর্দ্র পরিবেশকে আরামদায়ক রাখার জন্য এসি ব্যবহার অপরিহার্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বছর তাপমাত্রা বাড়ার ফলে এসির চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে সেই অনুপাতে বাংলাদেশে এসির দাম তেমন বৃদ্ধি পায় নি। এসি মূলত ঘরের তাপমাত্রা ও পরিবেশকে নিয়ন্ত্রন করে থাকে। আর এক্ষেত্রে দক্ষ এবং কার্যকরভাবে এসি ব্যবহার নিশ্চিত করতে, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। তাছাড়া, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ফলে এয়ার কন্ডিশনার দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারে উপযোগী থাকে। তাহলে চলুন এসি রক্ষণাবেক্ষণের উল্লেখযোগ্য টিপস সমূহ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
১। নোংরা এয়ার ফিল্টার এসির কার্যক্ষমতা অনেকাংশে কমিয়ে দেয় যা এসি ব্যবহারে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হবে। তাই প্রতি ২-৩ মাস অন্তর এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করা করতে হবে। তাছাড়া যদি ঘন ঘন এসি ব্যবহার করা হয় কিংবা ধুলাবালি পূর্ণ এলাকায় থাকা হয় সেক্ষেত্রে আরও ঘন ঘন পরিষ্কার করা উচিত।
২। ইভাপোরেটর কয়েলগুলো সময়ের সাথে সাথে নোংরা হয়ে থাকে, যা এয়ার কন্ডিশনারের কার্যকারিতা কমিয়ে দেওয়ার পাশপাশি শক্তি খরচ বেড়ে যেতে পারে৷ তাই পর্যায়ক্রমে কয়েল পরিষ্কার করতে হবে।
৩। বিল্ডিংয়ের বাইরে থাকা কনডেন্সারের কয়েলগুলো ধুলো, ময়লা এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষের সংস্পর্শে থাকার কারণে দ্রুত নোংরা হয়ে যেতে পারে। তাই বিডিতে এসি যেন দক্ষতার সাথে চলতে পারে তা নিশ্চিত করতে পর্যায়ক্রমে কনডেন্সার কয়েলগুলোও পরিষ্কার করতে হবে।
৪। এছাড়াও এয়ার কন্ডিশনারের পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ সিস্টেম পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং প্রয়োজনে পরিষ্কার করতে হবে।
৫। এসিতে রেফ্রিজারেন্ট লেভেল পরিমানমত রয়েছে কিনা তা চেক করে দেখতে হবে। যদি রেফ্রিজারেন্ট লেভেল কম থাকে সেক্ষেত্রে এসির কার্যকারিতা কমে যাবে এবং শক্তি খরচ বেড়ে যেতে পারে। তাই পর্যায়ক্রমে রেফ্রিজারেন্টের লেভেল চেক করতে হবে এবং প্রয়োজনে আরও যোগ করতে হবে।
৬। এসির আউটডোর ইউনিট যেন পাতা, ডালপালা কিংবা ধ্বংসাবশেষ ব্লকেজ না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাংলাদেশে এসি দক্ষতার সাথে চালানোর জন্য বাইরের ইউনিটটি যথাসময়ে পরিষ্কার রাখতে হবে।
৭। যদি থার্মোস্ট্যাটে কোনো সমস্যা যেমন ভুল তাপমাত্রা রিডিং বা সেটিংস সামঞ্জস্য করতে অসুবিধা হয়, সেক্ষেত্রে থার্মোস্ট্যাট সঠিকভাবে পরীক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে এসির থার্মোস্ট্যাট পরিবর্তন করতে হবে।
৮। এসির সাথে বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ যথাযথভাবে রয়েছে কিনা এবং ব্যবহৃত তার কোনো ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিনা তা ভালোভাবে চেক করতে হবে। প্রয়োজনে ক্ষতিগ্রস্থ তারের সংযোগ রিপেয়ার করতে হবে।
৯। প্রযুক্তিগত উন্নতির সাথে সাথে আপগ্রেড এনার্জি ইফিশিয়েন্ট এসি বিবেচনা করা উচিত। কারণ নতুন টেকনোলোজি ও ফিচারযুক্ত এসি বেশি শক্তি-দক্ষ হয় এবং দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারে যথেষ্ট বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয়ী করবে।
১০। উপরের টিপস গুলো অনুসরণ করার পাশাপাশি প্রফেশনাল সার্ভিসিং নিতে পারেন। বর্তমানে বাংলাদেশে কম খরচে এসি রক্ষনাবেক্ষনের জন্য প্রফেশনাল সার্ভিসিং এর সুব্যবস্থা রয়েছে। এক্ষেত্রে এসির বাইরের আউটডোর সহ সার্ভিসিং খরচ ৮০০-১২০০ টাকার মধ্যে হবে। আর যদি এসির আউটডোর বারান্দার ভিতরে স্থানে হয় সেক্ষেত্রে কিছুটা কম খরচে সার্ভিসিং পাওয়া যাবে।
উপরোক্ত রক্ষণাবেক্ষণ টিপসগুলো অনুসরণ করে, আপনি আপনার এয়ার কন্ডিশনারকে দক্ষতার সাথে চালানোর পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যার ঝুঁকি কমাতে পারবেন।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: August 02, 2023