আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন কেনাকাটা
আলট্রাসনোগ্রাফি মূলত শব্দ শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রুপান্তর করার প্রক্রিয়া থেকে উদ্ভাবন করা হয়। বাদুড়ের আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে পথচলা এবং সেই শব্দ একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে গিয়ে কত সময়ের মধ্যে ফিরে আসে এসব বিষয় থেকেই প্রথমে পদার্থ বিজ্ঞানে আলট্রাসাউন্ড এর বিষয়ে গবেষনা শুরু হয়েছিলো। এছাড়া বাহ্যিক শব্দ ছাড়াও মানুষের শরীর থেকে কিছু শব্দ পাওয়া যায় যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হৃদপিন্ড সঞ্চালন। আমরা পরস্পর বুকে কান রাখলে শব্দ শুনতে পায়। বিংশ শতাব্দিতে পদার্থ বিজ্ঞানীরা এই শব্দ কে ব্যবহার করে কিভাবে ইমেজ বা ছবি তে রুপান্তর করা যায় সে বিষয়ে গবেষণা করেছিলেন। পরবর্তিতে এই শব্দ প্রয়োগ করে ইমেজ পাওয়ার প্রক্রিয়াটিকেই আলট্রাসনোগ্রাফি বলা হয় । এক্ষেত্রে শব্দের কম্পাঙ্ক ১-১০ মেগা হার্টজ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন ব্যবহারঃ
আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিনটির ব্যবহার মূলত বাংলাদেশে প্র্যাগনেন্সি অবস্থায় মায়ের পেটে বাচ্চার অবস্থান, শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি এবং ডাইগোনেস্টিকে বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে অনেকে এটিকে আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন বলে থাকে।
আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিনে কত দামে পাওয়া যায়?
আবিষ্কার পরবর্তী সময়ে আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন মডেল এসেছে এবং একেকটি মডেলে ভিন্ন ভিন্ন ফিচার রয়েছে। বাজারে রয়েছে জিইও, ফিলিপস, সিমেন্স, ক্যানন এর মত জনপ্রিয় কিছু ব্র্যান্ড তাই দামের ক্ষেত্রে তারতম্য রয়েছে। আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের দাম বাংলাদেশে ৮,৫০০ টাকা থেকে শুরু যেটি একটি ফেটাল ড্রপলার এবং মাতৃগর্ভের বাচ্চার স্পন্ধন শোনা যায়। তবে ডায়াগনোসিস কাজের জন্য উন্নতমানের আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন দরকার যেগুলোর দাম ৫০০,০০০ টাকা থেকে শুরু।
আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন কেনার পূর্বে যে বিষয় গুলো অবশ্যই দেখে নিতে হবেঃ
ট্রান্সডুসার প্রোবঃ
আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ । এটি তরঙ্গ প্রেরণের প্রধান বাহক যা রোগীর স্ক্যানরত জায়গাই শব্দ প্রেরণ করে সঠিক ইমেজ প্রদান করে। ট্রান্সডুসার প্রোব বিভিন্ন ধরনের হয় যার মধ্যে লিনিয়ার, কনভেক্স, ট্রান্সসোফেজিয়াল প্রোব কিংবা ৩ডি, ৪ডি প্রোব রয়েছে । প্রত্যেকটি প্রোব এর ইমেজের ধরণ এবং ল্যাবের স্যাম্পল টেস্ট এর বিষয় গুলো বিবেচনায় নিয়ে কেনা উচিত।
সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিটঃ
সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট থেকে প্রাপ্ত ইমেজ ডাক্তার কিংবা ল্যাব টেকনেশিয়ান পরীক্ষা করার জন্য মনিটরে পাঠায়। কাজের দ্রুততা ও চাহিদার উপর নির্ভর করে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট যাচাই করে কেনা উচিত । বাজারে বিভিন্ন কনফিগারেশনের ইন্টেল, এএমডি প্রসেসর সম্মিলিত সিপিইউ রয়েছে। তাই কেনার সময় আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিনতে হবে।
ডিসপ্লেঃ
সিপিউ থেকে প্রাপ্ত ইমেজ এবং ব্যাখ্যাসমূহ দেখে যাচাই বাচাই করার জন্য ডিসপ্লের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে একটি ভালো ডিসপ্লে অবশ্যই প্রয়োজন। আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের জন্য কালার ডপ্লার, পাওয়ার ডপ্লার, স্প্রেক্টারাল ডপ্লার কিংবা ওয়েভ ডপ্লার ডিসপ্লে প্রয়োজন যার সাহায্যে প্রেগন্যান্সি, রক্ত কিংবা অন্যান্য রোগের পরীক্ষার জন্য সঠিক কালার প্রদর্শন করে। তাই প্রেগন্যান্সি টেস্ট বা ল্যাবে বিভিন্ন ধরনের স্যাম্পল পরিক্ষা নীরিক্ষা করার জন্য ব্যবহার করা যাবে সেসব বিষয় বিবেচনায় ডিসপ্লে কেনা উচিত।